মূল ইংরেজী :বুদ্ধরক্ষিত ভিক্ষু
বাংলা তর্জমা : শিপ্ত বড়ুয়া
১
মনের রাজ্যে মন অগ্রগামী
অর্থাৎ মন এখানে প্রধান;
সবকিছু মনের দ্বারা গঠিত হয়।
যদি অপবিত্র মন নিয়ে
কেউ কথা বলে কিংবা কাজ করে,
দুঃখ তাকে চক্রাকারে অনুসরণ করে
ষাঁড়ের মতো পেঁছনে ঘুরতে থাকে।
২
মনের রাজ্যে মন অগ্রগামী
অর্থাৎ মন এখানে প্রধান;
সবকিছু মনের দ্বারা গঠিত হয়।
যদি পবিত্র মন নিয়ে
কেউ কথা বলে কিংবা কাজ করে,
সে সুখে থাকে
ছায়ার মতো সুখ তাঁর পেছন পেছন থাকে।
৩
আমাকে উৎপীড়িত করলো,
তিরষ্কৃত করলো,
পরাজিত করলো,
সর্বস্বান্ত করলো,
যারা সবসময় এরকম চিন্তার আশ্রয়ে থাকেন
তাদের কখনো শত্রুতার উপশম হয় না।
৪
আমাকে উৎপীড়িত করলো,
তিরষ্কৃত করলো,
পরাজিত করলো,
সর্বস্বান্ত করলো,
যারা এরকম চিন্তার আশ্রয়ে থাকে না
তাদের শত্রুতার উপশম হয়।
৫
জগতে শত্রুতা দ্বারা
শত্রুতার নিবৃত্তি হয় না।
মিত্রতার দ্বারা
শত্রুতার নিবৃত্তি হয়।
এটাই জগতের শাশ্বত ধর্ম।
৬
জগতে কেউ কেউ
কখনোই বুঝতে পারে না যে
একদিন অবশ্যই মারা যাবো।
যারা এটা বুঝতে পারে
তাদের কলহ দূর হয়।
৭
প্রবল ঝড় যেমন
দুর্বল বৃক্ষকে উড়িয়ে দেয়,
ঠিক তেমনি
যারা শুধু আনন্দের জন্য বাঁচে,
চিন্তা চেতনায় অসংযত,
অপরিমিত খাদ্যে অভ্যস্ত,
অলস এবং অপচয়কারী,
মার তাদের পরাভূত করে।
৮
প্রবল ঝড় যেমন
শীলাময় পর্বতের কোন ক্ষতি করতে পারে না,
ঠিক তেমনি
যারা মধ্যম পন্থায় জীবন-যাপন করে,
ধৈর্য ধরে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে,
চিন্তা ও খাদ্যকে সংযত রাখে,
বিশ্বাস এবং আন্তরিক প্রচেষ্টায় নিজেকে গড়ে
মার কখনোই তাকে পরাভূত করতে পারে না।
৯
চরিত্রহীন,
আত্মসংযমহীন,
সত্যবাদিতাহীন ব্যক্তি
অথচ গেরুয়া বস্ত্র পরিধান করে ভিক্ষু হয়,
সে ভিক্ষুত্ব জীবনের উপযুক্ত নয়।
১০
যে নিজের নৈতিক বিকৃতি পরিষ্কার করেছে,
নিজেকে উৎকৃষ্ট রূপে পড়ে তুলেছে,
আত্মসংযমপূর্ণ এবং সত্যবাদী.
তিনি গেরুয়া বস্ত্রে ভিক্ষু হওয়ার উপযুক্ত।
১১
যারা অসার বস্তুকে সার
এবং
সার বস্তুকে অসার মনে করেন
সেই সব মিথ্যকল্পনাবিলাসীরা
কখনোই সঠিক সার বস্তুর সন্ধান পান না।
১২
যারা সার বস্তুকে সার
এবং
অসার বস্তুকে অসার মনে করেন,
সেই সম্যকসংকল্পের অধিকারী ব্যক্তিরা
প্রকৃত সার বস্তুর সন্ধান পান।
১৩
বৃষ্টি যেমন সহজেই
অপরিপক্ক ঘরে প্রবেশ করে,
তেমনি একটি অস্ফুটিত মনে
বৃষ্টির ন্যায় দুঃখ প্রবেশ করে।
১৪
বৃষ্টি যেমন সহজে
একটি পরিপক্ক ঘরে প্রবেশ করতে পারে না,
তেমনি প্রস্ফুটিত মনে
কখনোই দুঃখ প্রবেশ করতে পারে না।
১৫
পাপাচারী ব্যক্তি
ইহকাল এবং পরকালে কষ্ট পায়;
তার পাপকর্মের অনুশোচনার দরুণ।
১৬
সৎ ব্যক্তি
ইহকালে এবং পরকালে সুখে বসবাস করে;
সৎকর্ম সুখ এনে দেয়।
সমস্ত সৎকর্মের কারণে
আনন্দ-উল্লাস নিত্য সঙ্গী হয়।
১৭
পাপাচারী ব্যক্তি
ইহকালে এবং পরকালে;
দুঃখ ভোগ করে।
যখন বুঝতে পারে
“আমি পাপ কাজ করেছিলাম”
তখন আরো বেশি দুঃখ পায়, অনুশোচনায় ভোগে,
এমনকি চূড়ান্ত শোকের দিনেও।
১৮
সৎ ব্যক্তি
ইহকাল এবং পরকালে
পরমানন্দে থাকে।
“আমি ভালো কাজ করেছিলাম”
এই অনুভূতি যখন জাগে,
আরো বেশি সুখ অনুভূত হয়
যখন সে পরমানন্দের রাজ্যে থাকে।
১৯
যে ব্যক্তি
অধিক জ্ঞানমূলক (ধর্ম) চর্চা করে,
কিন্তু অনুরূপ সঠিক কাজ করে না,
তার কখনো জ্ঞানের অধিকারী হতে পারে না।
ঠিক রাখাল বালকের ন্যায়
যার শুধু গেরস্থের গরু গণনা করে দিন যায়,
কখনো গরুর মালিক হতে পারে না।
২০
যে স্বল্প জ্ঞান চর্চা করেও,
কুশল শিক্ষা জীবনে প্রয়োগ করে,
রাগ, দ্বেষ ও মোহ
প্রজ্ঞা দ্বারা পরিত্যাগ করে,
প্রস্ফুটিত মন দ্বারা
জাগতিক মোহে আকৃষ্ট হয়না,
তারা সুখী এবং স্বর্গীয় জীবন-যাপন করে।