গৌতম বুদ্ধের জীবন ও মানুষের প্রতি বার্তা

মূল ইংরেজী : কে.শ্রী ধম্মানন্দ ভিক্ষু
অনুবাদ : শিপ্ত বড়ুয়া

বুদ্ধ ধর্মের পথ                                                                                               গৌতম বুদ্ধ

খ্রীষ্টপূর্ব ৬ষ্ট অব্দে উত্তর ভারতে বসবাস করতেন গৌতম বুদ্ধ, যিনি বুদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক। বুদ্ধের ব্যক্তিগত নাম ছিলো সিদ্ধার্থ কিন্তু পারিবারিক নাম ছিলো গৌতম। যখন তিনি বুদ্ধত্ব লাভ করেন এবং বোধি জ্ঞান লাভ করার পর গৌতম বুদ্ধ নামটি তাঁকে দেওয়া হয়েছিলো।

বুদ্ধ মানে জ্ঞানী বা যিনি জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়েছে। তিনি নিজেকে সাধারণত “তথাগত” বলে আখ্যায়িত করতেন এবং শ্রদ্ধা করে তার অনুসারীরা বুদ্ধকে “ভগবা” বলে সম্বোধন করতেন। অন্যান্যদের কাছে গৌতম কিংবা শাক্যমুনি হিসেবে বুদ্ধ পরিচিত ছিলেন।

গৌতম যদিও রাজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তারপরেও রাজদরবারের বাইরের দুঃখময় পরিস্থিতি সম্পর্কে তার জানার আগ্রহ জন্মালো। গৌতমকে ছোটকাল থেকে রাজকীয়ভাবে লালন-পালন করেছিলো তার পরিবার, তাছাড়া তাঁর রাজপরিবার সবদিক থেকে পরিমিত ও অমলিন ছিলো।

তাঁর উপস্থিতি ছিলো সৌন্দর্যের শ্রেষ্ঠ উপহার। গৌতম রাজপরিবারের একমাত্র উত্তরাধিকার ছিলো, উপযুক্ত, উদ্দীপক বিশ^াসী ও মহিমান্বিত ছিলো। গৌতম ষোল বছর বয়সে মামাতো বোন যশোধারাকে বিয়ে করেন পরে যে বিরক্তের কারণ হয়ে দাঁড়ালো, পরবর্তীতে রাহুল নামে তাঁদের এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। যশোধারা ছিলো ঐশর্যশালী, সবসময় প্রফুল্ল, লাবণ্য ও মর্যদাপূর্ণ।

রাজপরিবার, সুন্দর স্ত্রী-পুত্র থাকা সত্তে¡ও গৌতমের অন্তর বিলাসিতার কাছে আটকা অনুভূত হলো যেনো সোনার খাঁচায় বন্দি পাখি। হঠাৎ করে একদিন রাজ্যভ্রমণে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গৌতম এবং চার দিনে চারটি ভিন্ন দৃশ্য দেখতে পেলো, প্রথম দিনের ভ্রমণে তিনি একজন বৃদ্ধকে দেখতে পেলেন, দ্বিতীয় দিন রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, তৃতীয় দিন মরদেহ এবং শেষদিনে একজন নির্জনবাসী সন্ন্যাসীকে দেখতে পেলেন।

গৌতম দিনের পর দিন এসব দৃশ্য দেখার পর প্রাথমিক কিছু ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলেন যে, “ জীবন কি তাহলে জন্ম থেকে মৃত্যুর একটি ছোট অধ্যায় মাত্র? ”। নিজেকে প্রশ্ন করলেন গৌতম, জীবনের শেষ গন্তব্য কোথায়? যেখানে জন্ম কিংবা মৃত্যু নেই। যে ভব জীবনের তৃষ্ণা ত্যাগ করেছে, স্থীর হয়েছে রাজ্য ভ্রমণের শেষ দিনের সন্ন্যাসীর জীবন সে চিন্তা করলো এবং এসব ভাবনা গৌতমের গৃহত্যাগ করার প্রথম অধ্যায়ের সূত্রপাত ছিলো।

সার্বজনীন দুঃখমুক্তির উপায় জানতে গৌতম দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হলেন এবং গৃহত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন অবশেষে। ২৯ বছর বয়সে এক রাতে ঘুমন্ত অবস্থার স্ত্রী যশোধারা এবং পুত্র রাহুলকে নিরব বিদায় জানিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত ঘোড়া অশ^কন্থকের পিঠে চড়ে গভীর জঙ্গলের দিকে রওনা হলেন।

ইতিহাসের পাতায় গৌতমের গৃহত্যাগ ছিলো নজীরবিহীন। ক্ষমতা, আনন্দ, রাজকীয় জীবন, ধন-সম্পদের মালিকানা ছেড়ে নানান অসুবিধা, অনিশ্চয়তা নিয়ে একজন সন্ন্যাসী হিসেবে বিচরণ করা শুরু করলেন। শুধুমাত্র গেরুয়া রঙের একটি পোশাক ছিলো শরীরে যেটি দিয়ে প্রবল রোদ, বৃষ্টি, শীত এবং বাতাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতেন, তাছাড়া তিনি পাহাড়ের গোহা এবং জঙ্গলে বসবাস করতে লাগলেন।

গৌতম তাঁর পূর্ব অবস্থান, সম্পদ, নাম-জশ এবং ক্ষমতা নিবৃত্ত করলেন এবং নিজের জীবনকে ভালোবাসা এবং পরিবর্তনের আশায় পরিপূর্ণ করেছেন, এসব তাঁকে দুঃখমুক্তির অনুসন্ধানের পথে পরিচালিত করেছে যা আগে কেউ খোঁজ করেও পায়নি।

দীর্ঘ ছয় বছর কঠোর সাধনা তাঁর জন্য মুশকিল হয়ে দাঁড়ালো। গৌতম সে সময়ের উচ্চতর লেখাপড়া করেছিলেন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষকগণ তাঁকে মুক্তির পথ দেখাতে পারবেন এই বিশ্বাসে তাঁদের কাছে নানান ধর্মীয় শিক্ষা নিয়েছিলেন।

দীর্ঘদিন এভাবে অধ্যায়নের পরেও তিনি কোনরকম মুক্তির পথ যখন দেখলেন না একটি সন্ন্যাসীদের একটি দলে যোগ দেন এবং তাঁদের ধ্যানরীতি অনুসরণ করে নিজের শরীরের উপর নিরব অত্যাচার চালিয়েছিলো এই বিশ্বাসে যে শরীরের সব শক্তি এবং হস্তক্ষেপকে যাতে চূর্ণ করা যায়, তাছাড়া গৌতম প্রায় বিশ্বাস করে নিয়েছিলো যে এভাবে বুদ্ধত্ব লাভ বা দুঃখমুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

গৌতম প্রচুর ইচ্ছেশক্তিসম্পন্ন একজন মানুষ ছিলেন, এমনকি তপস্যাতেও অন্যান্য তপস্বীকে তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। সম্পূর্ণ উপবাস করতে গিয়ে তিনি যখন দেখলেন যে তাঁর শরীরের চামড়া শুকিয়ে গেছে, পেট ও শীরদাঁড়া এক হয়ে গেছে, তখন থেকে সে অল্প অল্প খেয়ে ধ্যান-সাধনা শুরু করলেন।

গৌতম এমন কঠোরভাবে ধ্যান করেছিলেন যে আগে কেউ করেনি, এবং এরকম ধ্যান-সাধনা করতে থাকলে তিনি মারা যাবেন এই উপলব্দি আসলো গৌতমের। এমন উপলব্দি না আসলে অবশ্য গৌতম মারা যেতেন।

বৈশাখী পূর্ণিমার রাতে গৌতম গয়ার বোধি বৃক্ষ বা অশ্বত্ব বৃক্ষের নিচে ধ্যানে বসলেন এবং কঠোর ধ্যানে মগ্ন হযে পড়লেন। সেসময়ে তিনি মহাবিশ্বের নানান প্রশ্ন এবং মানবজীবন ও প্রকৃতির দুঃখমুক্তির সন্ধান তাঁর মনে বিস্ফোরিত হলো। অবশেষে ৩৫ বছর বয়সে গৌতম একজন আলোকিত মানবরূপে বুদ্ধত্ব লাভ করেন এবং হয়ে উঠেন বুদ্ধ।

প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে মহামতি গৌতম বুদ্ধ ভারতের অনির্দিষ্টি পথে হেঁটেছেন এবং তার সাধনায় প্রপ্ত জ্ঞান এবং ধর্ম মানুষের মাঝে বিলি করেছেন যাতে সাধারণ মানুষরাও চর্চার মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে দুঃখহীন ও উন্নত করতে পারে।

পরবর্তীতে যারা বুদ্ধের দেখানো পথ ধরে সন্ন্যাসী হয়েছেন তাঁদের জন্য তিনি কিছু বিধি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখনকার বর্ণপ্রথা, নারীর অধিকার, ধর্মীয় চিন্তার স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তার প্রসারের দ্বার উন্মোচন করার জন্য এবং সমস্ত মানবজাতিকে দুঃখ হতে মুক্ত করার জন্য তিনি বিচরণ করেছেন এসব জায়গায়।

জীবনের সবটুকু সময় ধনী-গরীব উভয়ের কাছেই ব্যয় করেছেন। এমনকি গৌতম বুদ্ধ আঙুলিমালের মতো পাপী থেকে শুরু করে যে বেশ্যাবৃত্তির সাথে জড়িত আম্রপালীর জীবনে এনে দিয়েছিলেন নতুন সম্ভাবনার দ্বার, তাঁদের জীবনকে করেছেন উন্নত।

মহামতি গৌতম বুদ্ধ জ্ঞান এবং বুদ্ধিদীপ্ততার সর্বোচ্চ স্থরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। প্রতিটি সমস্যার বিষয় নিয়ে বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করেছেন এবং এসব সমস্যার উৎপত্তি ও কারণ ও পুনরায় ব্যাখ্যা করেছেন। প্রশ্ন-উত্তরে গৌতম বুদ্ধকে কেউ পরাস্ত করতে পারেন না আজ অবধি।

গৌতম বুদ্ধ সর্বপ্রথম মনোজগৎ ও নানান ঘটনার সর্বাধিক বিশ্লেষক, একজন অতুলনীয় শিক্ষক যিনি বর্তমানের দিনেও অনন্য। ইতিহাসের পাতায় প্রথম মানবজাতিকে নিজেদের জীবন নিয়ে, দুঃখ নিয়ে আলোচনা করার উপায় বের করে দিয়েছিলেন, মানবজাতির মূল্য উত্থাপন করেছিলেন এবং নিজের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধ দেখিয়েছিলেন যে, মানুষ নিজের পরিশ্রম এবং চেষ্টায় জ্ঞান ও মুক্তির সর্বোচ্চ স্থরে পোঁছে যেতে পারেন।

এতো জ্ঞান এবং একজন রাজবংশের উত্তরাধিকারী হওয়া স্বত্তে¡ও তিনি কখনোই সাধারণ মানুষকে অবজ্ঞা করেন নি। শ্রেণী এবং বর্ণের পার্থক্যগত পার্থক্যকে বুদ্ধ কোন পাত্তাও দিতেন না, তাঁর মতে সবাই ছিলো সমান, ধনী-গরীব কেউই তাঁর কাছে মূখ্য ছিলো না, অনায়াসে সবাইকে তিনি দীক্ষিত করেছিলেন।

এমনকি গৌতম বুদ্ধের কাছে যখন ভিন্ন বর্ণের কিংবা গরীব কেউ আসতো তাঁদের আত্মসম্মানবোধ আরো বেশি অনুভব করতে পারতো তাঁরা এবং তাঁদের অজ্ঞ জীবন মহৎ সত্ত্বার জীবনে উন্নীত হওয়ার পরামর্শ পেতে। মহামতি গৌতম বুদ্ধ সকলের প্রতি ছিলেন খুবই সহানুভূতিশীল (করুণা) এবং জ্ঞানের আলোকবর্তিকা, আলাদাভাবে এক এক ব্যক্তিদের জ্ঞানের স্থর তিনি বুঝতে পারতেন এবং সে অনুযায়ী কাকে কিভাবে দুঃখমুক্তির পথ দেখানো যায় তা তিনি ভালোভাবে আয়ত্ত¡ করেছিলেন।

শুধুমাত্র একজন আলাদা ব্যক্তিকে জ্ঞানের পথ এবং দীক্ষা দেওয়ার জন্য বুদ্ধ অনেকদূরের পথ হেঁটে যেতেন। তাঁর শিষ্যদের প্রতি গৌতম বুদ্ধ ছিলেন অনুগত এবং স্নেহশীল, সবসময় তাঁদের পরিবর্তন এবং উন্নতির অবস্থান বিষয়ক খোঁজ-খবর নিতেন। যখন তিনি বিহারে থাকতেন, প্রতিদিন অসুস্থ শিষ্যদের দেখতে যেতেন, অসুস্থ শিষ্যদের প্রতি মমত্ববোধ ও পরামর্শ হিসেবে তিনি বলতেন যে, “তোমরা যে অসুস্থ হয়েছো তার মানে আমার খুব কাছাকাছি এসেছো”।

শিষ্যদের পারষ্পারিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার জন্য গৌতম বুদ্ধ সবসময় তাদের মধ্যে নিয়ম এবং আদেম জারি রাখতেন। প্রাসন্ধি নামে এক রাজা বুঝতে পারতেন না বুদ্ধ তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্যদের কিভাবে সহজেই একত্রে রাখতেন, মানিয়ে রাখতেন এবং সুন্দরভাবে নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতেন, প্রাসন্ধি যখন রাজা ছিলেন তাঁর ক্ষমতা ছিলো এবং তখন প্রজাদের নানান শাস্তি দেওয়ার পরেও তিনি তাঁদের মানিয়ে রাখতে পারতেন না, এনিয়ে তিনি অবাক হয়ে পড়েছিলেন।

অনেক অলৌকিক ক্ষমতা বুদ্ধের বিরাজমান ছিলো কিন্তু এসব নিয়ে তিনি কখনোই তেমন ভাবেন নি। তাঁর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ অলৌকিক ক্ষমতা ছিলো সত্যকে এবং মানবজীবনের দুঃখকে ব্যাখ্যা করার এবং একজন সাধারণ মানুষকে তা উপলব্দি করতে সামর্থ্য হওয়ার।

নানান চিন্তা ও জীবনের দুঃখমুক্তির শেকল থেকে মানবজাতিকে কিভাবে মুক্ত করা যায় তা নিয়ে তিনি যুক্তিগত ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন। মানবজাতির দুঃখ থেকে মুক্তি লাভের উপায় বলেছেন একজন শিক্ষক গৌতম বুদ্ধ যার করুণা অসীম। বুদ্ধ কখনোই দাবী করেননি যে, বৈশি^ক পরিস্থিতি, সার্বজনীন নানান ঘটনা, জীবনবিধি আমরা যাকে ধর্ম বলে দাবী করি তা বুদ্ধ সৃষ্টি করেছেন।

তিনি নিজেকে শুধুমাত্র “লোকাবিধো” অথবা “বিশ^জগতের জ্ঞানী” হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলেন। সার্বজনীন বিশ্বাস এবং ধর্মীয় ব্যবস্থার কাছে তখন থেকে মহামতি গৌতম বুদ্ধ কখনোই অনুগত বন্দি হিসেবে থাকেন নি। তিনি নির্দ্বিদ্ধায় স্বীকার করেছেন যে ধর্ম সৃষ্টি থেকে শুরু করে বিশ^জগতের নানান কাজ কখনোই সময় মেনে হতে পারে না বরং এসব নিরবধি, এবং এসবের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই ও এসবের গতিবিধি পরম অর্থে স্বাধীন।

মহাবিশ্বের বিদ্যমান প্রতিটি শর্তযুক্ত ক্রিয়া তার নিজস্ব ধর্মের ক্রিয়ার স্বপক্ষে কাজ করে। বুদ্ধ যা করেছিলো (তার পূর্বোক্ত বুদ্ধদের ন্যায়) তা হলো নিশ্চিত জ্ঞানকে অনুধাবণ করা এবং মানব মুক্তির পথকে পুনরুদ্ধার করে মানবজাতির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। এসব জ্ঞান অর্জনের পর অন্তহীন জন্মচক্রের ঘুরার প্রক্রিয়া থেকে কিভাবে চুড়ান্তভাবে নিজেকে মুক্ত করা যায় এমন উপায়গুলো খুঁজে পেয়েছিলেন এবং তা একজন মানুষের খারাপ দিক এবং অসন্তোষ থাকা সত্ত্বেও প্রয়োগ করেছিলেন।

তাঁর ধর্ম প্রসারের ৪৫ বছর পর, গৌতম বুদ্ধ ৮০ বছর বয়সে কুশিনারাতে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন, হাজার বৌদ্ধ ভিক্ষু, অনুসারী এবং মানব মুক্তির অমূল্য সব নির্দেশনা রেখে যান যা বুদ্ধের ত্যাগ এবং অসীম ভালোবাসার শক্তি এখনো বিরাজমান।

ইতিহাসের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মধ্যে একজন এইচ. জি ওয়েলস বলেছেন:

আপনি বুদ্ধকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ, সহজ, ধর্মপ্রাণ, একাকী হিসেবে দেখতে পাবেন, যিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য লড়েছেন, একজন মানবিক গুণাবলি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হিসেবে, এবং এসব শুধুমাত্র শ্রুতি বা শোনা কথা নয়। তিনি মানবজাতির আচার-আচরণ নিয়ে বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। বেশিরভাগ আধুনিক উন্নত চিন্তা এবং ধারণা বুদ্ধের সেসময়ের ধারণার সাথে এখনো সঙ্গতিপূর্ণ।

স্বার্থপরতায় মানব জীবনের সকল দুর্দশা-কষ্ট এবং অতৃপ্ত বিচ্ছিন্নতার জন্ম দেয়। একজন মানুষ নির্মল হয়ে উঠার আগে তাকে নিজের ইদ্রিয় বা নিজের জন্য বেঁচে থাকতে হবে, তারপর তিনি বিশালতায় মিশে যেতে পারেন। বুদ্ধ দর্শন ভিন্ন এক অধ্যায়।

কিছু কিছু মাধ্যমে তিনি আমাদের খুব কাঝে ছিলেন এবং আমাদের প্রয়োজনীয়তার কাছে। আমাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয়তায় গৌতম বুদ্ধের যথেষ্ঠ রসদ ছিলো এবং তা খ্রীষ্ট্র ধর্ম আসার পরেও এবং ব্যক্তিগত অনৈতিকতার প্রশ্নেও।

Archetype : Ven. K. Sri Dhammananda, What Buddhist Believe (Fifth Edition 1993, budaedu), (The Last Message of the Budhha, 39.)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *