প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সন্ধ্যার আলো তখনও মৃয়মান, তবে অধীর অপেক্ষার চোখগুলো অপলক তাকিয়ে থাকে কখন শুরু হবে। খালি মঞ্চ কিন্ত সম্মুখ সারিগুলো পরিপূর্ণ। ঐ দূরে তখন কয়েকজন সারাদিন ধান কেটে জড়ো হওয়া কৃষক কেবল বিড়িতে আগুন দিয়েছেন আর ধোঁয়া উড়ছে ভাঁপা পিঠা বানানোর উনুনে, মুন্ডিও চলছে সমানে বিক্রি, সাথে স্থানীয়দের ভাষায় সিদ্ধ “মক্কা গোলা” বা ভুট্টা। বলছিলাম রামুর রাজারকূলে জ্ঞানান্বেষণ পাঠাগারের উদ্যোগে হেমন্ত উৎসবের কথা।
১৬ই নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ শুরু হয় এই উৎসব। প্রথমে পাঠাগারের দলীয় সংগীত এরপর হেমন্ত উৎসবের উদ্বোধন করেন কক্সবাজারের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী। তিনি বলেন,একটি পাঠাগার একটি আলোর মশাল,দিকে দিকে যে মশাল আলোর পথ দেখায়। আর তাদের উদ্যোগে হেমন্ত উৎসব পাড়াগাঁয়ে অনন্য সাধারণ আয়োজন।
এরপর জ্ঞানান্বেষণ পাঠাগারের সভাপতি আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শিপ্ত বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কবি আসাদ মান্নান বলেন,বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড় বড় উৎসবে অংশ নেয়া হলেও এ উৎসবে নিজেকে খুঁজে পাওয়া গেলো। এসময় তিনি জ্ঞানান্বেষণ পাঠাগার সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, জ্ঞানের দ্বীপ কখনই নিভে না। এসময় তিনি পাঠাগারটির জন্যে বই প্রদানসহ বিভিন্ন সহযোগিতার কথা জানান। এতে অন্যানের মধ্যে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ফাহমিদা মুস্তফা, কবি আসাদ মান্নানের সহধর্মিনী কন্ঠশিল্পী নাজমা মান্নান,বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ধনিরাম বড়ুয়া, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, কবি মানিক বৈরাগী বক্তব্য রাখেন।
পরে আটজন লেখক’কে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তারা হলেন,ধনিরাম বড়ুয়া,দর্পন বড়ুয়া, নিলোৎপল বড়ুয়া,সংগীত বড়ুয়া,সজল দে, শিরুপন বড়ুয়া, কান্তু শর্মা ও কামাল হোসেন। পাশাপাশি সেরা ৭জন পাঠককেও দেওয়া হয় পুরষ্কার।
পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। রামুর প্রত্যন্ত গ্রাম পূর্বরাজারকূল বড়ুয়া পাড়ায় ২০১৭ সালে কয়েকজন সৃষ্টিশীল তরুন গড়ে তোলে জ্ঞানান্বেষণ পাঠাগার। বর্তমানে ৫ হাজারের অধিক বই আছে পাঠাগারটিতে। হেমন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এই পাঠাগারের উদ্যোগে।