যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল লম্বা চুল,
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল মস্ত ভুল।
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল নেশার ঝোক,
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল মাতৃ শোক।
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল জন্ম ক্রোধ,
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল উল্টো স্রোত।
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল স্বপ্ন ভুল,
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল ভগ্ন মূল।
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার ছিল আকাশ ছোয়া,
যখন আমি ভীষণ যুবক
আমার গেলো স্বপ্ন খোয়া।
::দূর্বা ঘাস::
বুকের মাঝে বাঁশির সুর
করুন হয়ে বাজে,
আমার আর ভাল লাগেনা,
মন বসে না কাজে।
চোখের ভিতর বালুর কণা
অনল হয়ে জ্বলে,
আমার আর বাঁধ মানেনা
অশ্রু ঝরে গ’লে।
গায়ে আমার শীতের কাঁপন
কন্টক হয়ে বিঁধে,
আমার আর ঘা শুকায় না
খাচ্ছি যেন ক্ষিদে।
ঘাড়ে আমার জগৎ সংসার
খড়গ হয়ে শাসায়,
আমার আর মন বসেনা
উল্টো স্রোতে ভাসায়।
পায়ে আমার পথের ধুলা
মলিন হয়ে লুটে,
আমার আর পথ ফুরায় না
মরছি মাথা ঠুকে।
মনে আমার মরণ ব্যাধি
ছড়ায় দূর্বা ঘাসে,
আমার আর রাত কাটেনা
মরণ কবে আসে।
::অপরিচিত লোকটা::
লোকটা মরেই গেলো হুট করে,
কোন রকমের প্রস্তুতি ছাড়া।
লোকটা বকছিল, একা একা
যমদূত এসে বলল, দাড়াঁ।
লোকটা একটা বারে লটকে ছিল
ঘন্টা দুয়েক, তারপর বাড়ি ফেরা।
লোকটা ঝিমাচ্ছিল, একা একা
যমদূত এসে বলল, চলো।
সাঁই সাঁই করে উবার ছুটছে,
লোকটা শহরের বাইরে হাওয়ায়
উড়বে বলে গাড়ির গ্লাস খুলে দিল।
আর অমনি যমদূত এসে ঢুকে পড়ল
একেবারে রুহুর মধ্যখানে, মৃত্যু।
লোকটা কিছু একটা বলবে বলে
খুব আকুতি করছিল, হয়তো!
অথচ তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
যমদূতের কাঁধে হেলান দিয়ে
লোকটা বিদায় নিল চিরতরে।
লোকটা হয়তো কিছু ভাবছিল
ভাবতে ছিল, কারণ লোকটা মদ্যপ
ছিল, একা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত।
চারিদিকেই তার সমুদ্র সৈকত,
প্রিয়জনের মত চারিপাশ ঘেরা
তবুও লোকটা বিচ্ছিন্ন একটা
দ্বীপ ছিল, নিজের মতন অদ্বিতীয়।
লোকটা কিছু একটা ভাবছিল
জন্ম মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, সংগোপনে।
পরশ পাথর, সাদা কালা কালা সাদা।
লোকটা অদৃশ্য সেই পাথরে মাথা
ঠুঁকছিল, আর বলছিল, বেঁচে গেলাম
নির্ধারিত জন্ম মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।।
লেখা: এলান অর্ঘ্য মালাকার, উপদেষ্টা, জ্ঞানান্বেষণ পাঠাগার।