মুঘলদের রামু বিজয়ের ঐতিহাসিক ইতিহাস (১ম পর্ব)

মুঘলদের রামু বিজয়

শিরুপন বড়ুয়া

মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর ভারতবর্ষে মুঘল শক্তি ক্ষয় হতে থাকে। দিল্লির সিংহাসন সামলানোই পরবর্তী মুঘল বাদশাহদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। এই সুযোগে ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করে ব্রিটিশরা ভারতবর্ষের রাজনীতিতে সরাসরি ঢুকে পড়ে। তারপর ১৭৬০ সালে নবাব মীর কাশিম হতে চট্টগ্রামের দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে ব্রিটিশরা আজকের টেকনাফ থানার নাফ নদীকেই ভারতবর্ষের সীমানা হিসেবে পাকাপোক্ত করে।

কিন্তু আওরঙ্গজেবের শাসনের প্রথম দিকে ১৬৬৬ সালে যদি মুঘলরা চট্টগ্রাম আক্রমণ না করতো, অথবা চট্টগ্রাম জয়ের পর যদি রামু জয় না করতো, তবে ব্রিটিশ ভারতের সীমানা হয়তো ভিন্ন হতো। এই জন্যেই মুঘলদের রামু বিজয়ের ইতিহাস জানাটা জরুরি।

মুঘলদের কাছে রামু পরিচিত ছিল রাম্বু নামে। মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের জীবনী আলমগীরনামাতে তেমনটাই উল্লেখ আছে। আবার ত্রিপুরার ‘রাজমালা’ গ্রন্থেও রামুকে রাম্বু বলা হয়েছে। এই অঞ্চলে ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকের কিছু নথিপত্রে ‘রাম্বু’ নামটি পাওয়া যায়।

আবার রাখাইনদের কাছে রামু পরিচিত ছিল ‘প্যানোয়া’ নামে। এই যে নামের মধ্যেই এতো ভিন্নতা, এটা কেনো হলো? কিভাবে হলো? মনের ভেতর এসব প্রশ্ন তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। আসলে আজকের টেকনাফ থেকে উত্তরে ফেনী নদীর মাঝখানে অবস্থিত রামু, পটিয়া, চট্টগ্রাম, এই বিশাল এলাকা কখনো শাসিত হয়েছে বাংলার গৌড়ের সাথে, কখনো ত্রিপুরার সাথে, আবার কখনো আরাকান এর সাথে।

কক্সবাজারে তাই গড়ে উঠেছে একটি মিশ্র সংস্কৃতির ইতিহাস। যা বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের ইতিহাসের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। এখনো রামু, উখিয়া, এবং টেকনাফ থানায় প্রায় ৩৬০ টি পালং এর নাম পাওয়া যায়। ‘পালং’ শব্দটি একটি আরাকানী শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে গ্রাম বা মৌজা।

মুঘলদের রামু বিজয় রামু’র ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ এই বিজয় ভারতবর্ষের মানচিত্রকে নাফ নদী পর্যন্ত বর্ধিত করেছিল। অথচ রামু তথা পুরো কক্সবাজার জেলাতে মুঘলদের স্মৃতি কিন্তু তুলনামূলকভাবে কমই বলা যায়। মুঘলরা যেখানেই গিয়েছে সেখানে আর কিছু না হোক, মসজিদ নির্মাণ করেছে। কিন্তু কক্সবাজার জেলায় সরাসরি মুঘল আমলে বা মুঘলদের আঞ্চলিক শাসকদের দ্বারা নির্মিত কোন স্থাপনা তেমন একটা চোখে পড়ে না। যে কয়েকটি মসজিদ আছে, তা মুঘল স্থাপত্য রীতির আদলে নির্মাণ করা হলেও মূলত এসব স্থাপনার বেশিরভাগই ব্রিটিশ আমলে তৈরি।

অর্থাৎ ১৭৬০ সালের পর। অনেকেই মনে করেন মুঘলদের সাথেই হয়তো এই অঞ্চলে অর্থাৎ চট্টগ্রামসহ রামুতে ইসলামের আগমন ঘটে। ধারণাটা একেবারেই ভুল। এই অঞ্চলে ইসলামের আগমন সুলতানি আমলে। খোদ আরাকান শাসকদের রাজসভায় বাংলা সাহিত্যের বেশ ক’জন গুরুত্বপূর্ণ মুসলমান কবি তাঁদের সাহিত্য কর্মের জন্য সমাদৃত হয়েছিলেন।

কোরেশী মাগন ঠাকুর (ইনি কিন্তু মুসলমান। মূলত ঠাকুর আরাকান রাজার দেয়া পদবী। আর তাঁর পিতা মাতা আল্লাহর দরবারে মেগে মানে প্রার্থনা করার পর তাঁর জন্ম হয় বলে নাম হয়েছিল মাগন), দৌলত কাজী এবং মহাকবি আলাওল তাঁদের মধ্যে অন্যতম। আরকান রাজা শ্রী চন্দ্র সুধর্ম্মার সমর সচিব সৈয়দ মোহাম্মদ খানের আদেশে রাজসভা কবি আলাওল রচনা করেন ‘হপ্ত পয়কর’।

রাজার অন্যতম আমত্য সোলেমানের আদেশে লেখা হয় ‘তোহ্ফা’ নামক ইসলামিক শাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ। বাংলা সাহিত্য অনেকটাই আরাকান রাজাদের কাছে ঋণী। এছাড়াও আরাকানী শাসকদের মুসলিম পদবী গ্রহণ করে গৌড়ের সুলতানের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানোর রীতিও ছিল। এসব কথা এজন্যই বলছি, কারণ অনেকে মনে করেন মুঘলদের চট্টগ্রাম আক্রমণের পেছনে ধর্মীয় কারণ ছিল। ধারণাটি সঠিক নয়।

মুঘলদের যদি সেরকম কোন উদ্দেশ্য থাকতো তবে শেষ শক্তিশালী বাদশাহ আওরঙ্গজেবের পূর্ববর্তী শাসকরা অনেক আগেই চট্টগ্রাম আক্রমণে মনোযোগ দিতেন। মুঘলদের চট্টগ্রাম অভিযানের পেছনে প্রধান উদ্দেশ্যটা ছিল ভাতৃহত্যার প্রতিশোধ এবং পর্তুগীজ ও আরাকানী জলদস্যুদের দমন।

মুঘলরা চট্টগ্রামে আসার অনেক আগে থেকেই আরাকানে মুসলিমদের বসতি গড়ে উঠে। তাছাড়া পঞ্চদশ শতকে আরাকান রাজা মিন সাও মুন তাঁর রাজ্য হারিয়ে গৌড়ে আশ্রয় নেন। প্রায় পঁচিশ বছর বঙ্গদেশে কাটানোর পর বাংলার সুলতানের সহায়তায় তিনি আবার আরাকান জয় করেন। তখনও তাঁর সাথে অনেক মুসলমান আরাকানে প্রবেশ করে।

এটা একদম নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, তৎকালীন আরাকান শাসকরা বর্তমানের মিয়ানমারের চেয়ে বরং আজকের বাংলাদেশের ভূখন্ডের সাথে বেশি ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু মুঘল শাহজাদা শাহ সুজাকে কেন্দ্র করে বাংলার সাথে আরাকানের এই দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক নষ্ট হয়।

মুঘল শাহজাদা শাহ সুজার আরাকান পলায়ন এবং রামুতে মুঘলদের অভিযান পরিচালনার মধ্যে একটি যোগসূত্র আছে। এ বিষয়ে একটু না বললে মুঘলদের রামু বিজয়ের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

বৃদ্ধ মুঘল বাদশাহ শাহজাহানের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাঁর চার পুত্রের মধ্যে সিংহাসন দখলের যে দ্বন্দ হয়, তার ঢেউ সুদূর আরাকানে আছড়ে পড়েছিল। মুঘল সিংহাসনের দৌঁড়ে শাহজাদা আওরঙ্গজেব অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন। তিনি একে একে তাঁর অন্য ভাইদের পরাজিত করে সিংহাসনে বসেন।

শাহ সুজা দিল্লির মসনদ দখলের যুদ্ধে ছোট ভাই আওরঙ্গজেবের কাছে পরাজিত হন। সুজা ছিলেন বাংলার গভর্নর। আওরঙ্গজেবের আদেশে মীর জুমলার নেতৃত্বে মুঘল রাজকীয় সৈন্যবাহিনী তাঁর পিছু নিলে সুজা প্রাণ বাঁচাতে রামু হয়ে আরাকান পালিয়ে যান।

অবশেষে ২০ বছর সুবা বাংলা শাসন করার পর ৪৩ বছর বয়সে ১৬৬০ সালের ১২ই মে মুঘল শাহজাদা শাহ সুজা বাংলা ছেড়ে আজানা-অচেনা আরাকান রাজ্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে আরাকান রাজা শ্রী চন্দ্র সুধর্ম্মা’র কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী হিসেবে বেশ কিছু সময় কাটানোর পর শাহ সুজাকে আরাকান রাজার আদেশে হত্যা করা হয় ১৬৬১ সালে।

ঠিক কি কারণে শাহজাদা সুজাকে হত্যা করা হয় সে বিষয়ে ইতিহাসবিদদের দু’টি পক্ষের মধ্যে বেশ বিতর্ক আছে। এক পক্ষের মতে শাহজাদা সুজা আরাকান রাজার সিংহাসন দখলের ষড়যন্ত্র করেছিলেন, এবং রিতীমতো বিদ্রোহ করেছিলেন। অন্য পক্ষের দাবী হচ্ছে, আরাকান রাজা শ্রী চন্দ্র সুধর্ম্মা শাহজাদা সুজা’র সুন্দরী কন্যাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। এতে সুজা ক্ষেপে গিয়ে বিদ্রোহ করেন।

এমনকি এটাও ধারণা করা হয় যে, মীর জুমলার প্ররোচনায় শ্রী চন্দ্র সুধর্ম্মা এবং শাহ সুজার মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। অথচ প্রথম দিকে কিন্তু শাহজাদা সুজার সাথে রাজার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল, যা আরাকান রাজসভা কবি আলাওল রচিত ‘হপ্ত পয়কর’ হতে ধারণা পাওয়া যায়।

কবি আলাওল রাজা শ্রী চন্দ্র সুধর্ম্মার প্রশংসা করে লিখেন,

“দিল্লীশ্বর বংশ আসি, যাহার শরণে পসি
তাহার সম কাহার মহিমা।”

যেহেতু মুঘলদের সাথে আরাকান রাজ দরবারের খুব একটা ভালো যোগাযোগ ছিল না, তাই শাহ সুজার শেষ দিনগুলো সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ইউরোপীয় বণিকদের কাছ থেকে সর্ব প্রথম সুজা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা যায়। এক ডাচ বণিকের মাধ্যমে আওরঙ্গজেব জানতে পারেন যে, ১৬৬১ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি আরাকান রাজার সৈন্যরা সুজার বাসস্থান ঘেরাও করলে সুজা ঘরটিতে আগুন লাগিয়ে দেন, এবং জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যান। কিন্তু পরে তাঁকে ধরে আনা হয়, এবং রাজার আদেশে হত্যা করা হয়।

কারণ যাই হোক, আরাকান রাজার হাতে এক মুঘল শাহজাদার হত্যাকান্ডের পর এই অঞ্চলের রাজনৈতিক সীমানা রাতারাতি পাল্টে যায়। সুজা যে সময় আরাকানে পালিয়ে যান, সেসময় ফেনী নদীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত চট্রগ্রামসহ রামু দীর্ঘদিন ধরে আরাকানের অধীনে ছিল। আওরঙ্গজেব দিল্লির সিংহাসন নিষ্কণ্টক করতে অন্য ভাইদের মতো অবশ্যই সুজাকেও হত্যা করতেন, এতে কোন সন্দেহ নেই।

কিন্তু একজন মুঘল শাহজাদা আরাকান রাজার হাতে প্রাণ হারাবেন, এটা দিল্লির মসনদে বসা মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেব কিছুতেই মেনে নিতে পারলেন না। এছাড়াও সে সময়ে পর্তুগীজ এবং আরাকানী জলদস্যুদের এতটাই দৌরাত্ম্য ছিল যে খোদ ঢাকার মুঘল সুবেদাররাও এদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতেন।

আরাকানী এবং পর্তুগীজ জলদস্যুদের প্রতিহত করার জন্য মুঘলরা মুন্সিগঞ্জে ইছামতী নদীর তীরে ইদ্রাকপুর কেল্লা, নারায়নগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে সোনাকান্দা কেল্লা এবং পশ্চিম তীরে হাজীগঞ্জ কেল্লা (এটি খিজিরপুর কেল্লা নামেও পরিচিত) নির্মাণ করেছিল।

মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেব ভাতৃ হত্যার প্রতিশোধ নিতে এবং জলদস্যু সংক্রান্ত এই সমস্যাগুলো চিরতরে নিরসনের লক্ষ্যে আরাকান রাজার অধীনে থাকা চট্টগ্রামে অভিযান পরিচালনার আদেশ দিলেন।

আলমগীরনামাতে চট্রগ্রাম অভিযান সম্পর্কে গুরুত্ব সহকারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কারণ বাদশাহ হওয়ার পর এটা আওরঙ্গজেবের অন্যতম প্রধান অভিযান ছিল। ১৬৬৫ সালের ২৪শে ডিসেম্বর ঢাকার মুঘল প্রাদেশিক গভর্নর শায়েস্তা খানের পুত্র বুজুর্গ উমেদ খান অন্তত ৪০০০ সৈন্য নিয়ে চট্টগ্রাম অভিমুখে রওনা হলেন। ২৫০০ জন সৈন্য নিয়ে ইকতিয়াস খান, ১৫০০ জন সৈন্য নিয়ে সারদাজ খান, ১০০০ জন সৈন্য নিয়ে ফরহাদ খান, আরো ১০০০ জন সৈন্য সহ কারাওয়াল খান, রাজা সুবল সিং সিসোদিয়া ১৫০০ জন এবং দারোগা ইবনে হোসেইন ৮০০ জন সৈন্য সহ বুজুর্গ উমেদ খানের সাথে যোগ দেন।

এই সৈন্যদলের সাথে আরো ৮০০ সৈন্য নিয়ে যোগদেন গোলন্দাজ বাহিনী প্রধান মীর মুর্তজা। শায়েস্তা খানের ২৫০০ জন সৈন্যও এই অভিযানে যোগ দেয়। চট্টগ্রাম অভিযান মুঘলদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা শায়েস্তা খানের জোরালো তৎপরতা দেখেই বোঝা যায়।

এই অভিযানের আগেই মুঘলরা চট্টগ্রাম সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা অর্জন করে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম হতে রামু পর্যন্ত দুর্গম পথ সম্পর্কে মুঘলদের অজানা ছিল না। তারা এটাও জানতো যে চট্রগ্রামের পর রামু ছিল আরাকান রাজার সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি। শায়েস্তা খানের নির্দেশে তাই মীর মুর্তজা হাজারের অধিক কুঠার সংগ্রহ করেন জঙ্গল পরিষ্কার করে রাস্তা তৈরি করার জন্য। ঢাকায় বসে শায়েস্তা খান অভিযানের সমস্ত খুঁটিনাটি খবরা খবর রাখতেন।

ঢাকা থেকে যাত্রা করার প্রায় একমাস পর ১৬৬৬ সালের ২৬ শে জানুয়ারি চট্টগ্রামে আরাকান দুর্গের পতন হয়। ২৮৮ টি জাহাজের বিশাল নৌবহর নিয়ে মুঘলরা ঝাঁপিয়ে পড়ে আরাকানী এবং পর্তুগীজ সৈন্যদের উপর। মুঘলদের সাথে ডাচরাও দুইটি জাহাজ নিয়ে এই যুদ্ধে যোগ দেয়। যুদ্ধের শুরুতেই সন্দ্বীপ হতে পর্তুগীজরা পরাজিত হয়ে বিতাড়িত হয়।

আরাকান নৌ বাহিনীর সাথে মুঘল নৌ-বাহিনীর পর পর কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এতে আরাকানী সৈন্যরা পরাজিত হয়ে পিছু হটে। মুঘলরা আনুমানিক ১০২৬ টি কামান এবং ১৩৫ টি যুদ্ধ জাহাজ জব্দ করে। বুজুর্গ উমেদ খানের হাতে চট্টগ্রামে কয়েক শত বছরের আরাকান শাসনের সমাপ্তি ঘটে।

মুঘলদের রামু বিজয়ের ঐতিহাসিক ইতিহাস (২য় পর্ব)

চট্টগ্রামের নাম পাল্টে নতুন নাম রাখা হয় ইসলামাবাদ। ঢাকায় বসে শায়েস্তা খান চট্টগ্রাম বিজয়ের খবর পান তিন দিন পর ২৯শে জানুয়ারি। উমেদ খান তড়িৎ গতিতে চট্টগ্রামে মুঘলদের প্রশাসনিক দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মিঞা খানকে চট্টগ্রামের উত্তরে প্রেরণ করেন সেখানে একটি থানা প্রতিষ্ঠা করার জন্য।

তাজ মিঞাকে একশজন বন্দুকধারী সৈন্যসহ ঐ থানার দারোগা নিয়োগ করে ফেনী নদী হতে চট্টগ্রাম প্রবেশের রাস্তা পাহারার দায়িত্ব দেওয়া হয়। উমেদ খান চট্টগ্রাম গ্যারিসনে আনুমানিক ৩,৫৩২ জন সৈন্য রেখেছিলেন। চট্টগ্রামকে ১১৭ টি ছোট পরগনায় ভাগ করা হয়, এবং এই পরগনাগুলো থেকে প্রায় ১,৫০,২৫১ টাকার মতো খাজনা আদায় করা হতো।

বি:দ্র: লেখাটি রামু’র ইতিহাস বিষয়ক গবেষণার একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। মুঘলদের রামু বিজয়ের ঐতিহাসিক ইতিহাস ১ম পর্ব প্রকাশিত হলো। ধারাবাহিক পর্ব পড়তে চোখ রাখুন জ্ঞানান্বেষণ পাঠাগার’র সাহিত্য ও শিল্প পাতায়। ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।

তথ্যসূত্র:
১। মুহম্মদ এনামুল হক,আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ, আরকান রাজসভায় বাঙ্গালা সাহিত্য, চট্টগ্রাম ১৯৩৫।
২। শ্রীপূর্ণচন্দ্র চৌধুরী, চট্রগ্রামের ইতিহাস, চট্রগ্রাম, ১২৮২ মগী।
৩। আহমদ শরীফ,চট্রগ্রামের ইতিহাস, ঢাকা, ২০০১।
৪। জামাল উদ্দিন, শাশ্বত চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম, ২০১৫।
৫। W Foster, Early Travels in India 1583-1619, Oxford University Press, 1921.
৬। Jadunath Sarkar, Anecdotes of Aurangzib and Historical Essays, Calcutta, 1917.
৭। The Calcutta Review, Vol.53, Calcutta, 1871.
৮। Anjali Chatterjee, Bengal in the Reign of Aurangzib.
৯। L.S.S O’mey, Eastern Bengal District Gazetteers-Chittagong, Calcutta 1908.
১০। W.W. Hunter, The Imperial Gazetteer, Vol.3, London, 1885.
১১। Shunati Bhusan Qanungo, A History of Chittagong Vol 1, Chittagong.
১২। Sir Arthur P Pyre, History of Burma, London, 1883.
১৩। G.E Harvey, History of Burma, Calcutta, 1925.
১৪। W.W Hunter, A Statistical Account of Bengal, Vol. 6, London, 1876.
১৫। Dr. Mohamed Ali, Bengal-Arakan Relations: A Study in Historical Perspective.
১৬। Aye Chan, The Kingdom of Arakan in the Indian Ocean Commerce (Ad 1430-1666), Kanda University of International Studies, JapanJapan.

লেখক: শিরুপন বড়ুয়া, আইনজীবী ও তরুণ ইতিহাস বিশ্লেষক।
shirubarua@gmail.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *