ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টির ষষ্ঠ দিনে সৃষ্টি করে নারীকে

ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টির ষষ্ঠ দিনে সৃষ্টি করে নারীকে।

সেই দিন ঈশ্বর কাজ করে সারাটি দিন ধরে। এক দেবদূত এসে ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করে, ” তুমি কেন এত সময় দিচ্ছো সামান্য এক নারীকে সৃষ্টি করতে?”

উত্তরে ঈশ্বর বলে, “তুমি কি লক্ষ্য করেছো, নারীকে যে সকল বিশেষত্ব দিয়ে আমি সৃষ্টি করেছি তাকে?

সকল পরিস্থিততে সে কর্তব্য পরায়ণ হবে।

সে তার ছেলেমেয়ে সামলাবে; তার ভালোবাসার ছোট্ট এক স্পর্শে তাদের শরীর ও মন আরোগ্য লাভ করবে।

সে তার সকল কাজ করবে শুধু মাত্র দু’টি হাত দিয়ে।

দিনে ১৮ ঘন্টা পরিশ্রম করার পরও সে তার নিজেরও খেয়াল রাখবে।”

দেবদূত মুগ্ধ হল, “শুধু মাত্র দুটি হাত দিয়ে …… অসম্ভব।

এটাই কি আদর্শ মডেল। দেবদূত নারীটির কাছে এলো এবং স্পর্শ করল।

” হে ঈশ্বর, তুমি তো এঁকে খুব নমনীয় ও কোমল  করে বানিয়েছো।”

“সে নমনীয় এবং কোমল। কিন্তু আমি তাঁকে অনেক শক্তিশালীও করেছি।

তুমি কল্পনাও করতে পারবে না সে কতখানি দৃঢ় আর সহনশীল, সে কতটা অপরাজেয় হতে পারে।”

” সে কি চিন্তা করতে পারে?” দেবদূত জিজ্ঞেস করে।

উত্তরে ঈশ্বর বলে, ” সে শুধু চিন্তাই করতে পারে না, সে ন্যায় ও যুক্তি দিতে পারে আবার সে যে কোন সমস্যার মধ্যস্থতাও করতে পারে।”

দেবদূত নারীটির গাল স্পর্শ করে…. ” হে ঈশ্বর, আমার মনে হয় তোমার এই সৃষ্টির চোখ থেকে যেন জল ঝরছে। তুমি নিশ্চয় এর উপর অনেক কষ্ঠের বোঝা চাপিয়েছো।”

“তার কোন জল ঝরছে না, এটা তাঁর অশ্রু।” ঈশ্বর দেবদূতকে বলে।

“এখানে অশ্রুর কেন দরকার হলো? দেবদূত জানতে চাইল।

উত্তরে ঈশ্বর বললো, “অশ্রু হচ্ছে তার সন্দেহ, তার  ভালোবাসা, তার একাকিত্ব তার যন্ত্রনা এবং তার গৌরব প্রকাশের উপায় মাত্র।”

দেবদূতের মুগ্ধতা বেড়ে গেল, “হে ঈশ্বর তোমার তুলনা তুমি নিজেই। তুমি সব বিষয়েই চিন্তা করেছো। একজন নারীকে প্রকৃত অর্থেই বিস্ময়কর করে বানিয়েছো।”

ঈশ্বর বলে, “প্রকৃতপক্ষে সে তাই। পুরুষকে চমৎকৃত করবার সকল সামর্থই আছে তার। সে যে কোন সমস্যা মোকাবেলায় সিদ্ধহস্ত, আবার সে অনেক ভারী দায়িত্বও তার কাঁধে বহন করতে পারে। সে সুখ দিতে জানে, সে ভালোবাসতে জানে এবং নিজের মতামত ধারণ করতে পারে। যখন তার চিৎকার দিতে ইচ্ছে করবে তখন সে হাসবে। সে গান গাইবে যখন তাঁর কাঁদতে ইচ্ছে করবে। সে কান্না করবে যখন সে সুখী হবে। সে হাসবে যখন সে ভীত হবে। সে যুদ্ধে যাবে যখন সে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করবে।”

তার ভালোবাসা শর্তহীন হবে। তার হৃদয় ভেঙে যাবে যখন তাঁর নিকটজনের মৃত্যু হবে। সে তার শক্তি নিয়ে জীবনে আবার ফিরেও আসবে।”

দেবদূত জিজ্ঞেস করে, হুমম, বুঝেছি ঈশ্বর, তোমার এই সৃষ্টি অবশ্যই নিখুঁত হবে।”

ঈশ্বর উত্তরে বলে, “না। নারীর একটিই অপূর্ণতা থাকবে, বারবার সে তার নিজের মূল্য ভুলে যাবে।”

মূল : ডেভিনা ন্যান্ড। অনুবাদ : রাজিক হাসান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *